শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিক রোহিঙ্গাদের প্রথমবারের মত করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে; প্রথম দফায় ৪৮ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় উখিয়া উপজেলার কুতুপালং মধুরছড়া ৪-এক্সটেশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকা প্রদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাস কমিশনার শাহ মোহাম্মদ রেজওয়ান হায়াত।
এসময় সাংবাদিকদের শাহ মোহাম্মদ রেজওয়ান হায়াত বলেন, উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪ টি ক্যাম্পের ৫৬ টি কেন্দ্রে একযোগে রোহিঙ্গাদের প্রথখমবারের মত করোনার টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। এর মধ্যে উখিয়া ৪৬ টি ও টেকনাফের ১০ টি কেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হচ্ছে।
“ প্রথম দফায় ৫৫ বছর বা তার চেয়ে বেশী বয়সীদের ৪৮ হাজার রোহিঙ্গা এই টিকা দেয়া হবে। প্রতিদিন ৭ হাজার করে সিনোফার্মার প্রথম ডোজের টিকা প্রয়োগ করা হবে। আগামী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। ”
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেন, “ সরকারের অর্থায়নে রোহিঙ্গাদের করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে। শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহায়তায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলেও ডব্লিউএইচও, ইউএনএইচসিআর ও ইউনিসেফের কাছ থেকে সামান্য কিছু টেকনিক্যাল এসিসট্যান্স নেয়া হয়েছে। ”
শাহ মো. রেজওয়ান হায়াত জানান, প্রথম ডোজের পর দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগের জন্য পর্যাপ্ত টিকা মজুদ রয়েছে। পরবর্তীতে ৫৫ বছরের কম বয়সী রোহিঙ্গাদেরও পর্যায়ক্রমে টিকা প্রদানের আওতায় আনা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্যাম্পগুলোর টিকা কেন্দ্রে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনেটর, নার্স, টেকনিশিয়ান ও স্বাস্থ্যকর্মি সহ সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ২ টি বুথে দুইজন করে টিকা প্রদানকারি ও তিনজন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন।
চীনের তৈরী সিনোফার্মার ৫০ হাজার ডোজ টিকা প্রথমবার প্রয়োগের জন্য মজুদ রয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন।
মাহবুবুর বলেন, “ বিগত ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিগত সহিংসতার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ‘ফ্যামিলি কাউন্টিং নম্বর বা পরিবার পরিচিতি নম্বর’ নিবন্ধন করা হয়। সেই তালিকা ধরে ৫৫ বছর বা তার বেশী বয়সের রোহিঙ্গাদের টিকা গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। পরে মনোনীত ব্যক্তিদের ঘরে ঘরে টিকার নিবন্ধন কার্ড পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তারাই মঙ্গলবার সকাল থেকে টিকা গ্রহণ করছেন। ”
এসময় কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবর রহমানসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
জেলা সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্য মতে, দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্তের পর থেকে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে সোমবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৯২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply